আড্ডা-হৈচৈ, স্মৃতিচারণের একদিন

এখনই সময় :কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল। সঙ্গে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি। সূর্য তখনও তার আভা ছড়ায়নি। তবে আভা ছড়িয়েছে হাজারও প্রাণের স্পন্দন। চাদর মুড়িয়ে ঘুমিয়ে থাকার এইদিনে খোলা মাঠে আড্ডা, হৈ-চৈ আর উচ্ছ্বাসের পাশাপাশি উন্মাদনায় মেতে উঠেন আশুগঞ্জ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র উচ্চবিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তাদের আনন্দ-উচ্ছ্বাসে যেন আকাশেরও মন ভালো হয়ে যায়। দুপুর না গড়াতেই প্রকৃতি তার চিরেচেনা রূপ ছড়িয়ে দেয়।
বৃষ্টি ছাপিয়ে পুব আকাশে উকি দেয় সুর্যি মামা। চারিপাশে খেলা শুরু করে রুদ্দুর। বিদ্যালয়ের সামনের মাঠ ততক্ষণে বর্তমান ও সাবেক শিক্ষক-শিক্ষার্থীর পদচারণায় মুখরিত। স্মৃতিচারণের এই দিনে সবাই যেন তার শৈশবকে খুঁজে পেয়েছিলেন।
আশুগঞ্জ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র উচ্চবিদ্যালয় এক্স স্টুডেন্টস এসোসিয়েশন (এটেক্সার) আয়োজনে শুক্রবার এমন একটি দিন উপভোগ করেছেন বিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা।
সকালে রেজিস্ট্রেশনের পর বিদ্যালয়ের শিক্ষক নাহাশ পাশার পরিচালনায় অ্যাসেম্বলির মাধ্যমে শুরু হয় কর্মসূচি। পরে জাতীয় পতাকার পাশাপাশি এটেক্সার পতাকাও উত্তোলন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন। এটেক্সার আহবায়ক যুগ্মসচিব মাহমুদুল হাসান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন টি.এম রাশেদুল হাসান রনি। এসময় উপস্থিত ছিলেন আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশনের এমডি এএম সাজ্জাদুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন, মো. রেজাউল কবির, এটেক্সার সাধারণ সম্পাদক জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক সাইফুর রহমান মনি প্রমুখ।
অুনষ্ঠানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র উচ্চবিদ্যালয়ের ওপর ডকুমেন্টারি প্রদর্শণ করা হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা নস্টালজিয়ায় পড়ে যান। আবেগে আপ্লুত হয়ে যান অনেকেই। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা পারফর্ম করেন।
কৃষণপক্ষ, রেশমিসহ শিল্পীদের গানে উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেন বিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা। এর পাশাপাশি আতশবাজি আর ফানুসের আলোয় আলোকিত হয়ে উঠে রাতের আকাশ। শীত উপেক্ষা করে মধ্যরাত পর্যন্ত উচ্ছ্বাস শেষে ক্লান্ত-শ্রান্ত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ঘরে ফেরেন অন্যরকম ভালোলাগা নিয়ে।
বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী রুবেল, এরশাদ, মাহবুব, রতন, অপু, সাথী, রোকসানা, জাকিয়া, পিংকি, স্বপ্না, দিপু, মহসিন, আবির, ইমন, রাকেশ, বাদল, তপন, ডালিম, সুমন উচ্ছ্বাসের সঙ্গে বলেন, এমন একটি দিনে আমরা যেন হারিয়ে গিয়েছিলাম সেই শৈশবে। স্কুলে সেই প্রিয় শিক্ষকদের দেখে আবেগে আপ্লুত হয়েছি। সেই চিরচেনা স্কুল আঙ্গিনা, ক্লাসরুম দেখে নস্টালজিয়ায় ভুগেছি। অন্যরকম একটি দিন কেটেছে আমাদের।
এটেক্সার আহবায়ক যুগ্মসচিব মাহমুদুল হাসান খান বলেন, এই মিলনমেলার মাধ্যমে বিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীর মাঝে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আরও দৃঢ় করবে। এটেক্সার সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান মনি বলেন, উৎসবটি সবার কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বিদ্যালয়ের ৫০ বছর পূর্তি উৎসব আরও বড় পরিসরে আয়োজন করা হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।