ক্রিকেটে ভারত বধের ১৫ বছর, কোথায় আছি আমরা

এখনই সময় :২২ বছর আগের কথা। ১ বলে দরকার ১ রান। ক্রিজে তখন বাংলাদেশের টেল অর্ডারে থাকা পেসার হাসিবুল হোসেন শান্ত। মাঠের অপরপ্রান্তে তখনকার সবচাইতে নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যানদের একজন খালেদ মাসুট পাইলট। কথা ছিলো একটাই। বল যেখানেই যাক দৌড়ে ১ রান নিতেই হবে। শেষ পর্যন্ত দৌড়ে এক রান নিয়ে ক্রিজ পাড় হয়ে গ্যালারি পর্যন্ত ছুটে গিয়েছিলেন শান্ত। স্মরণীয় সেই ম্যাচে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পায় বাংলাদেশ।
কিন্তু আজ হঠাৎ এ প্রসঙ্গ কেনো? কারণ একটাই। গুটি গুটি পায়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটের এগিয়ে যাবার পথে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিন আজ। ১৫ বছর আগে ২৬ ডিসেম্বরের এই দিনে প্রথমবারের মতো শক্তিশালী ভারতকে হারায় বাংলাদেশ। এখন অনেকের কাছেই বিষয়টা তেমন গুরুত্বপূর্ণ নাও হতে পারে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ জয় না পেলে আমরা ক্রিকেটারদের তুলোধুনো করতেও ভুল করিনা ইদানীং। কিন্তু এক সময় ক্রিকেট ভক্তদের কাছে বিষয়টি ছিলো স্বপ্নকে ছুঁয়ে দেখার মতো। আইসিসি র্যাংকিংয়ে প্রথম সারির একটি দল ভারতকে হারানো! মাত্র ১৫ রানের সেই জয় বাংলাদেশ ক্রিকেটকে দিয়েছিলো অন্য রকম এক আত্মবিশ্বাস।
তরুণ সেই বাংলাদেশ দলের তারকা ছিলেন হাবিবুল বাশার সুমন, মুহাম্মদ আশরাফুল, মাশরাফি বিন মুর্তজারা। সেই সঙ্গে দারুণ আশা জাগিয়েছিলেন রাজিন সালেহ ও আফতাব আহমেদ। আর সে সময় নাফিস ইকবালকে নিয়েও যথেষ্ট ভালো সম্ভাবনা দেখত ক্রিকেট ভক্তরা। তাদের মধ্যে ইনজুরির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে টিকে ছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা।
বর্তমান বাংলাদেশ ক্রিকেট দল যে কোনো দলকে হারানোর মানসিকতা রাখে এবং বিষয়টিকে সমীহ করে চলেন ক্রিকেট বিশ্বের সকল মোড়ল। আর তা সম্ভব হয়েছে যাদের জন্য তাদের মধ্যে অন্যতম মাশরাফি বিন মুর্তজা। তার হার না মানার মানসিকতায় পাশে পেয়েছিলেন সাকিব আল হাসানের মত বিশ্ব সেরা এক অল রাউন্ডারকে। আর ব্যাট হাতে বাংলাদেশের এই লড়াইয়ে সামনে থেকে ভূমিকা রেখেছেন ওপেনার ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল এবং মিডল অর্ডারে থাকা মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। আর বিগত বছরগুলোতে বল হাতে কাটার মাস্টার মুস্তাফিজ।
বাংলাদেশের বর্তমান দলে ম্যাচ পরিবর্তন করে দেওয়ার জন্য এই খেলোয়াড়দের যে কেউ যথেষ্ট। আর তাদের পাশাপাশি বর্তমান ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াবার মত সক্ষমতা রয়েছে আরও অনেক খেলোয়াড়ের। কিন্তু এই সবকিছুর কেন্দ্রে থেকে শক্তি যোগানো সাকিব আল হাসান নেই। তার নিষেধাজ্ঞায় বাংলাদেশ দলে যে ক্ষত তৈরি হয়েছে তা পুষিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে কত সময় লাগবে, সেটাই এখন প্রশ্ন।