হস্তান্তরের জন্য প্রস্তুত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের টেস্টিং কিট
ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর বলছেন এটা তো এপ্রুভড কোনো প্রডাক্ট না

এখনি সময় ডেক্সঃ করোনা নির্ণায়ক জিআর কোভিড-১৯ টি ডট ব্লট র্যাপিড টেস্টিং কিট হস্তান্তরের জন্য প্রস্তুত বলে ঘোষণা দিয়েছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। আজ শনিবার ঢাকায় গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
তবে কিটগুলো হস্তান্তরের জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তাঁদের কেউ আসেননি। আগামীকাল রোববার গণস্বাস্থ্য কিটগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেবে।
তবে ওষুধ প্রশাসন বলছে, গণস্বাস্থ্যকে এমন অনুষ্ঠান করতে মানা করেছিল তারা। কিট উদ্ভাবনের স্পেসিফিকেশন উল্লেখ করে নিবন্ধন আবেদন করতে বলেছিল ওষুধ প্রশাসন। এ বিষয়ে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা কেন যাব? এটা তো এপ্রুভড কোনো প্রডাক্ট না। তারা আবেদন করবে। তারপর নিবন্ধনের প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে।
বিজন কুমার শীল ও তাঁর দল ডট ব্লট র্যাপিড টেস্টিং কিট কীভাবে কাজ করবে তা হাতে-কলমে দেখান। চাকতির মতো ছোট একটি ডিভাইসে রক্তের কয়েকফোঁটা দিলে যদি ডিভাইসে দুটি দাগ ভেসে ওঠে তাহলে করোনাভাইরাস পজিটিভ বলে ধরে নিতে হবে। যদি দাগ একটি ওঠে, তাহলে ধরে নিতে হবে করোনাভাইরাস নেই। বিজ্ঞানী বিজন কুমার শীল বলেন, ‘আমরা গত দুইমাস ধরে কিট উদ্ভাবনের চেষ্টা করছিলাম। উই হ্যাভ ডান ইট।’
গবেষকরা আজ আরও জানিয়েছেন এই প্রক্রিয়ায় এন্টিজেন ও এন্টি বডি দুটি পরীক্ষা করাই সম্ভব হবে। অর্থাৎ, ভাইরাস শরীরে থাকা অবস্থায় যেমন শনাক্ত করা যাবে, তেমনি ছেড়ে যাওয়ার পরও ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন কি না তা বোঝা যাবে। সংক্রমিত হলে রক্তে একটা পরিবর্তন ঘটে। পরীক্ষার মাধ্যমে তা-ই বেরিয়ে আসবে।
এই কিটটি শতভাগ ক্ষেত্রে ঠিক ফল দেবে না এমন সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বিজন কুমার শীল বলেন, কোনো পদ্ধতিই শতভাগ সঠিক নয়। তাঁরা গণস্বাস্থ্যের কিট দিয়ে পরীক্ষা করেছেন এবং সঠিক ফল পেয়েছেন বলে জানান।
গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, এই কিট বিশ্বের স্বাস্থ্যব্যবস্থায় বিরাট পরিবর্তন আনবে এবং স্বাস্থ্যসেবাকে সহজলভ্য করবে।
জাফরুল্লাহ তাঁর বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী দপ্তর, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোনেম, চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত, এনবিআর কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের এই প্রতিষ্ঠাতা বলেন, ‘আবদুল মোনেমকে অনেক ক্রিটিসাইজ করেছি। কিন্তু যখন বলেছি, বিশ্বের নানা দেশে আমাদের কাঁচামাল আটকে ছিল, তিনি আনিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন।’
ড. বিজন শীল ছাড়াও এই দলে ছিলেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বিববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড ফিরোজ আহমেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্বিবদ্যালয়ের অনুজীববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড নিহাদ আদনান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুজীববিজ্ঞান বিভাগেরসহকারী অধ্যাপক ড মো. রাশেদ জমিরউদ্দীন এবং আইসডিডিআরবির বিজ্ঞানী ড. আহসানুল হক। গবেষণাকাজের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ মহিবুল্লাহ খন্দকার।