করোনা: বৃদ্ধা ও বৃদ্ধকে ফেলে গেলো স্বজন, উদ্ধার করে হাসপাতালে

এখনই সময় :
সাভারে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে পৃথক স্থান থেকে এক বৃদ্ধা ও বৃদ্ধকে ফেলে গেছে স্বজনরা। পরবর্তীতে তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার রাতে জয়নাবাড়ি ও পৌর এলাকার মাঝিপাড়া থেকে তাঁদের উদ্ধার করে সাভার উপজেলা প্রশাসন। তবে তাঁরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কি না, তা নিশ্চিত নয়।
উপজেলার ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নাজমুল হুদা বলেন, শনিবার সকাল থেকে সাভারের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের জয়নাবাড়ি এলাকায় ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধা বসে ছিলেন। করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে এলাকার লোকজন রাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজুর রহমানকে বিষয়টি জানান। খবর পেয়ে ইউএনও এর নির্দেশে সাভারের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ রাতেই জয়নাবাড়ি এলাকা থেকে তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
এ ছাড়া শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে সাভার পৌর এলাকার মাঝিপাড়া থেকে ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধকে উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি রাস্তায় পড়ে পেটব্যথায় কাতরাচ্ছিলেন। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উদ্ধারকৃত উভয়েরই কাশিসহ করোনার উপসর্গ থাকায় স্বজনরা তাদের ফেলে রেখে যায় বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে। উদ্ধারের পর দুজনকেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশন ইউনিটে রাখা হয়েছে। তাঁদের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
শনিবার (১৮ এপ্রিল) সাভারের হেমায়েতপুরে জয়নাবাড়িতে ৬৫ ঊর্ধ্ব অজ্ঞাত ওই নারীকেই নিয়ে তখন শোরগোল গোটা এলাকায়। কেউ কাছে ভিড়ছেন না। এমন পরিস্থিতিতে মমতা নিয়ে ওই নারীর কাছে গেলেন ম্যাজিস্ট্রেট। তাকে ‘মা’ সম্মোধন করে ব্যক্তিগতভাবে তার সকল দায়িত্ব নিলেন ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ। এরপর থেকেই ওই নারী অসংখ্য সন্তানের মা হয়ে গেছেন।
‘করোনাভাইরাসে আক্রান্ত- এমন সন্দেহে থেকেই সম্ভবত অসহায় এক মাকে ফেলে রেখে গেছেন তার সন্তানেরা। আমরা আতঙ্কে আছি। আপনারা দ্রুত এসে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যান।’ এলাকাবাসীর কাছ থেকে এমন ফোন পেয়েই সাভারের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মাহফুজকে বিষয়টি জানান নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজুর রহমান। আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ বলেন, ‘সকলের সন্দেহ, সম্ভবত করোনা আক্রান্ত ভেবে সন্তানরা তাকে ফেলে চলে গেছেন। যাইহোক এখন উনি আমার মা। ব্যক্তিগতভাবে উনার সকল দায়-দায়িত্ব এখন থেকে আমার। আজ উনার শরীরের নমুনা পরীক্ষার পর যদি করোনা পজিটিভ আসে তবে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে পাঠানো হবে।’
এখন পর্যন্ত কোনো প্রশ্নেরই উত্তর দিচ্ছেন না ওই বৃদ্ধা। ধারণা করা হচ্ছে সন্তানদেরকে পদস্থ করতে চাইছেন না বলেই চুপ করে আছেন তিনি।
বর্তমানে বৃদ্ধার ঠিকানা সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র। জানা গেছে রোববার (১৯ এপ্রিল) করোনা শনাক্তে তার নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হবে মহাখালীর ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথ (আইপিএইচ)-এ। তবে এখন পর্যন্ত তার কোনো পরিচয় জানা যায়নি।